আজ বুধবার, ১২ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পাপ্পা গাজীর সিদ্ধান্তে খুশি প্রধানমন্ত্রী

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-১ রূপগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের জ্যেষ্ঠপুত্র ও রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গাজী গোলাম মূর্তজা পাপ্পার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে পাপ্পা গাজী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ‘ভালো করেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের উপজেলা নির্বাচন ঘিরে নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা। এসময় তিনি এমন মন্তব্য করেন।

দৈনিক প্রথম আলোর একটি সংবাদে বলা হয়েছে, বৈঠকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের প্রভাব বিস্তার না করতে নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের স্বজনদের প্রার্থী করার বিষয়টি যে পছন্দ নয়, সেটিও জানিয়ে দেন তিনি। যাঁরা এমন প্রার্থী করেছেন, তাঁদেরকে ভবিষ্যতে পরিবার নিয়েই থাকতে বলেও সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী।

জাতীয় সংসদের সরকারি দলের সভাকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সংসদ সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বৈঠকে সূচনা বক্তব্য দেন সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। পরে তিনি সংসদ সদস্যদের কথা শোনেন এবং কিছু কিছু বিষয়ে নিজের মত প্রকাশ করেন। সন্ধ্যা সাতটার পর শুরু হওয়া বৈঠক চলে এক ঘণ্টার বেশি সময়।
দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে যেসব মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন, তাঁদের সতর্ক করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাঁরা নিকট আত্মীয়দের প্রার্থী করছেন, ভবিষ্যতে তাঁদের পরিবার নিয়েই থাকতে হবে। জনগণ ও নেতা–কর্মীদের ভোট তাঁরা পাবেন না। সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা বলেন, নিজের পরিবারকে বড় না করে আওয়ামী লীগকে বড় করতে হবে।

একাধিক সংসদ সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের স্বজনদের ভোটে থাকা খারাপ হিসেবে দেখছেন, এটাই প্রকাশ পেয়েছে। এ সময় দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বিষয়ে যথাসময়ে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন প্রধানমন্ত্রী।

সূত্র জানায়, বৈঠকে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, তাঁর ছেলে গোলাম মূর্তজা পাপ্পা নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন  কিন্তু দলীয় নির্দেশনা দেওয়ার পর ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে নেন প্রধানমন্ত্রী। এবং দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে পাপ্পা গাজী ‘ভালো করেছে’ বলে মন্তব্য করেন।

সূত্রটি বলছে, কেবল প্রধানমন্ত্রীই নন। পাপ্পা গাজীর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়টি জানতে পেরে বৈঠকে থাকা অনেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য বাহবা দেন। কেউ কেউ বিষয়টি দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলার উৎকৃষ্ট উদাহরণ বলেও মন্তব্য করেন।

তার আগে গত ৩০ এপ্রিল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং গাজী গ্রুপ ও বিসিবি পরিচালক গোলাম মূর্তজা পাপ্পা।

এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ জন্মের পর যখন থেকে বোঝতে শিখেছি তখন থেকেই আমি বঙ্গবন্ধু ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মী৷ রূপগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের চাওয়া ছিল আমি যেন এবার রূপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করি। নেতাকর্মীদের চাপে নির্বাচনের মনোনয়নও সংগ্রহ করি। কিন্তু দলের শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদ সদস্যদের স্বজনদেরকে এবার চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে নিষেধ করেছেন। আমার কাছে দল ও দলীয় প্রধানের নির্দেশই শেষ কথা। দেশের কোথায় কি হচ্ছে সেটা জানি না, রূপগঞ্জ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘাঁটি৷ রূপগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছারই প্রতিফলন হবে।’

তিনি বলেন, ‘ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ।
যার জন্য জীবন দিতে পারি, তাঁর জন্য প্রার্থীতা ছেড়ে দেয়া বড় কিছু নয়। একজন মুক্তিযোদ্ধা ও গাজী পরিবারের সন্তান হিসেবে দলের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেছি।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের অন্তত তিন জন জ্যেষ্ঠ নেতা জানিয়েছেন, উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার পর গোলাম মূর্তজাকে সমর্থন দিয়ে দলের বাকি তিন প্রার্থী নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেন। এতে পাপ্পা গাজীর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া নিশ্চিত হয়। তবে সংসদ সদস্যের স্বজনদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার ক্ষেত্রে দলীয় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলে গোলাম মূর্তজা বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হতে অস্বীকৃতি জানান।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ